Tuesday, September 9, 2025

সাদিক কায়েম ভিপি পদে জয়লাভ

 







ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট গণনা চলছে। এখন পর্যন্ত ১৬টি হলের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। এই ফলাফলে ভিপি পদে আবু সাদিক কায়েম এবং জিএস পদে এস এম ফরহাদ বিপুল ভোটে এগিয়ে রয়েছেন।

ঘোষণা করা ১৬টি হল হলো: সুফিয়া কামাল, ফজলুল হক হল, শহিদুল্লাহ হল, শামসুন নাহার হল, জগন্নাথ হল, জহুরুল হক হল, সলিমুল্লাহ মুসলিম হল, স্যার এফ রহমান হল, বিজয় একাত্তর হল, জসিমউদ্দিন হল, শেখ মুজিব হল, মাস্টারদা সূর্যসেন এবং জিয়া হল।

  • জগন্নাথ হল: এ হলে আবিদুল ইসলাম খান ১২৭৬ ভোট পেয়ে ভিপি পদে এগিয়ে ছিলেন, অন্যদিকে সাদিক কায়েম পান মাত্র ১০ ভোট। জিএস পদে মেঘমল্লার বসু ১১৭০ ভোট পেয়ে এগিয়ে ছিলেন।

  • রোকেয়া হল: এই হলে সাদিক কায়েম ১৪৭২ ভোট এবং আবিদুল ৫৭৫ ভোট পেয়েছেন। জিএস পদে ফরহাদ ১১২০ ভোট পান।

  • অমর একুশে হল: সাদিক কায়েম ৬৪৪, আবিদুল ইসলাম ১৪১ ভোট পেয়েছেন।

  • সুফিয়া কামাল হল: সাদিক কায়েম ১২৭০, আবিদুল ইসলাম ৪২৩ ভোট পেয়েছেন।

  • শহিদুল্লাহ হল: সাদিক কায়েম ৯৬৬, আবিদুল ইসলাম ১৯৯ ভোট পেয়েছেন।

  • ফজলুল হক হল: সাদিক কায়েম ৮৪১, আবিদুল ইসলাম ১৮১ ভোট পেয়েছেন।

এই আংশিক ফলাফল থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, প্রধান পদগুলোতে শিবির সমর্থিত প্রার্থীরাই এগিয়ে আছেন।

রিপোর্টার 

কাজী দেলোয়ারুল আজীম । 

Sunday, July 6, 2025

কারবালার ১০টি ভুল বোঝাবুঝি – মিথ‍্যা বনাম সত্য











• অনেকে মনে করেন কারবালার ঘটনা ছিল সুন্নি ও শিয়া দ্বন্দ্ব।

প্রকৃতপক্ষে, এটি ছিল এক জালিম শাসকের বিরুদ্ধে ন্যায়ের এক সাহসী প্রতিবাদ। ইমাম হুসাইন (রাদিয়াল্লাহু আনহু) ছিলেন রসূল (সা.)-এর প্রিয় নাতি ও একজন সাহাবি, কোনো দলীয় নেতা নন। তিনি ছিলেন ন্যায়ের পক্ষে, সত্যের সাথী।


• আশুরাকে কেবল শোকের দিন হিসেবে মনে করা হয়।

অথচ এই দিনটির ইতিহাস আরও প্রাচীন ও পবিত্র। এ দিনে আল্লাহ তাআলা মূসা (আ.)-কে ফেরাউনের জুলুম থেকে রক্ষা করেছিলেন। রসূল (সা.) কৃতজ্ঞতাবশত এই দিনে রোজা রাখতেন এবং তা এক বছরের গুনাহ মাফের কারণ বলে উল্লেখ করেছেন। (সহীহ মুসলিম: ১১৬২)


• তাজিয়া, শোক মিছিল ও শরীর আঘাত করার মতো আচার অনেকের কাছে ধর্মীয় অনুষঙ্গ।

অথচ ইসলামে এমন কিছুর অনুমতি নেই। রসূল (সা.) ও সাহাবিগণ কখনও এভাবে শোক পালন করেননি। বরং দেহে আঘাত করা, উচ্চস্বরে কান্নাকাটি করা নিষিদ্ধ কর্ম। (সহীহ বুখারী: ১২৯৪) .


• ইমাম হুসাইনকে শুধু শিয়াদের নেতা হিসেবে ভাবা হয়।

কিন্তু তিনি ছিলেন সমগ্র উম্মাহর গর্ব, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর প্রিয় নাতি এবং জান্নাতী যুবকদের সরদার। (সহীহ তিরমিযী: ৩৭৬৮) তাঁর ব্যক্তিত্ব সকল মুসলমানের কাছে অনন্য ও গ্রহণযোগ্য। 


• কারবালায় রসূল (সা.)-এর পরিবার সম্পূর্ণরূপে শহীদ হয়েছেন—এমন একটি ধারণা ছড়িয়ে আছে।

সত্য হলো, ইমাম হুসাইন (রা.) ও তাঁর কিছু সাহসী সাথী শাহাদাতবরণ করেন; পরিবারের অনেক সদস্য জীবিত ছিলেন এবং ইসলামের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।


• বিশ্বাস করা হয়, আশুরায় বিশেষ রান্না না করলে দুর্ভিক্ষ নেমে আসে।

এটি একটি কুসংস্কার ছাড়া কিছু নয়। শরিয়তে এমন কোনো বিধান নেই। বরং বিশেষ খাবার রান্না করে তাকে বাধ্যতামূলক মনে করাটা বিদআতের অন্তর্ভুক্ত।


• কেউ কেউ দাবি করেন, আশুরার রাতে আকাশে রক্তের দাগ দেখা যায়।

এ বিশ্বাসের কোনো ঐতিহাসিক, বৈজ্ঞানিক বা শরয়ি ভিত্তি নেই। এটি লোককথা ও অতিরঞ্জিত আবেগের ফসল।


• আশুরার রাতে মোম জ্বালানো, পানি বিতরণ, কবর জিয়ারতের মতো কাজকে বাধ্যতামূলক মনে করা হয়।

অথচ এসব রসূল (সা.) কিংবা সাহাবিদের কোনো আমল নয়। এগুলোকে ধর্মীয় আবশ্যকতা মনে করাটা একপ্রকার বিদআত।


• "ইয়া হুসাইন" বলে আহাজারি করলে গুনাহ মাফ হয়—এমন ধারণা প্রচলিত।

ইসলামে দুআ একমাত্র আল্লাহর কাছেই করতে হয়। কারও নামে সাহায্য চাওয়া শিরকের সীমানায় পড়তে পারে, যা অত্যন্ত বিপজ্জনক।


• অনেকে বিশ্বাস করেন, তাজিয়া মিছিলে অংশ নিলে মনের ইচ্ছা পূরণ হয়।

ইসলামে এমন বিশ্বাসের কোনো ভিত্তি নেই। এটি বিদআতের আওতায় পড়ে এবং শিরকের আশঙ্কাজনক দরজাগুলোর একটি।


উপসংহার

কারবালার ঘটনা আমাদের শেখায় অন্যায়ের মুখে মাথা নত না করা, সত্য ও ইনসাফের পথে অবিচল থাকা। আমরা যেন আবেগে নয়, সহীহ জ্ঞান ও বিশুদ্ধ আমলের মাধ্যমে আশুরার তাৎপর্য উপলব্ধি করতে পারি। আল্লাহ আমাদেরকে বিভ্রান্তি থেকে রক্ষা করে সঠিক পথের দিশা দিন।

সংগ্রহকৃত। 

কাজী দেলোয়ারুল আজীম 


Wednesday, June 4, 2025

নামাজ আসার অনেক পর মদ হারাম হয়েছে ।

 


ইসলাম পূর্ব যুগে এমনকি ইসলামের শুরুর দিনগুলোতেও মদ পানের প্রচলন ছিলো। আল্লাহ তায়ালা মোট চারটি ধাপে মদ হারাম করেন। 

প্রথম ধাপ 

আল্লাহ তায়ালা কোরআনের আয়াত নাজিলের মাধ্যমে ঘোষণা দিলেন যে, তোমরা খেজুর ও আঙ্গুর দ্বারা মাদক তৈরির পাশাপাশি উত্তম খাদ্য বস্তুও তৈরি করে থাক। যেমন পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে,

وَمِنْ ثَمَرَاتِ النَّخِيلِ وَالْأَعْنَابِ تَتَّخِذُونَ مِنْهُ سَكَرًا وَرِزْقًا حَسَنًا

‘আর খেজুর গাছের ফল ও আঙ্গুর হতে তোমরা মাদক ও উত্তম খাদ্য গ্রহণ করে থাক।’ (সূরা নাহল, আয়াত: ৬৭)

এই আয়াতে আল্লাহ তায়ালা সরাসরি মাদক হারাম করেননি, তবে জানিয়ে দিলেন, মাদক ভিন্ন জিনিস। আর উত্তম খাদ্যবস্তু ভিন্ন জিনিস। এই আয়াত নাজিল হওয়ার পর সাহাবায়ে কেরাম ধারণা করে নিলেন যে, মাদক সম্পর্কে কোনো বিধান আল্লাহ তায়ালা অচিরেই নাজিল করবেন।

দ্বিতীয় ধাপ 

এরপর সাহাবায়ে কেরাম যখন মাদক সম্পর্কে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করেন তখন আল্লাহ তায়ালা কোরআনের আয়াত নাজিলের মাধ্যমে তার প্রিয় হাবীবকে জানিয়ে দিলেন যে, মদের মাঝে উপকার ক্ষতি উভয়ই রয়েছে। তবে উপকারের চেয়ে ক্ষতির পরিমাণটা বেশি। কোরআনে এসেছে,

يَسْأَلُونَكَ عَنِ الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ قُلْ فِيهِمَا إِثْمٌ كَبِيرٌ وَمَنَافِعُ لِلنَّاسِ وَإِثْمُهُمَا أَكْبَرُ مِنْ نَفْعِهِمَا

‘তারা তোমাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। বল, এ দু’টোয় রয়েছে বড় পাপ ও মানুষের জন্য উপকার। আর তার পাপ তার উপকারিতার চেয়ে অধিক বড়।’ (সূরা বাকারা, আয়াত: ২১৯)

এই আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা সাহাবায়ে কেরামের অন্তরে মাদকের প্রতি কিছুটা ঘৃণার সৃষ্টি করে দিলেন। ফলে সাহাবায়ে কেরাম দু’দলে ভাগ হয়ে গেলেন। একদল ক্ষতির দিক বিবেচনায় তা বর্জন করলেন। আরেকদল চিন্তা করলেন, যেহেতু কিছুটা উপকার রয়েছে তাই তা গ্রহণে কোনো সমস্যা হবে না।

তৃতীয় ধাপ

এ পর্যায়ে আল্লাহ তায়ালা আয়াত নাজিল করে জানিয়ে দিলেন, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় নামাজের কাছেও যাওয়া যাবে না। যেমনটি ইরশাদ হয়েছে,

يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَقْرَبُوا الصَّلَاةَ وَأَنْتُمْ سُكَارَى

‘হে মুমিনগণ, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তোমরা নামাজের নিকটবর্তী হয়ো না।’ (সূরা নিসা, আয়াত: ৪৩)

চতুর্থ ধাপ

এই আয়াতে সবসময়ের জন্য মদকে পরিষ্কার হারাম ঘোষণা না করায় অনেকেই নামাজের সময় বাদে অন্য সময় মদ গ্রহণ করতেন। ইতিমধ্যে ঘটে যায় আরও একটি ঘটনা। আতবান ইবনে মালেক (রা.) কয়েক সাহাবিকে দাওয়াত করেন। যাদের মধ্যে অন্যতম একজন অতিথি ছিলেন সাদ বিন আবি ওয়াক্কাস (রা.)। খাবার শেষে মদপানের প্রতিযোগিতা আরম্ভ হয়। সেখানে আরবের প্রথা অনুপাতে কবিতা পাঠ ও নিজ নিজ বংশের গৌরবগাথা বর্ণনা শুরু হলে একজন মুহাজির সাহাবি আনসারদের দোষারোপ করে নিজেদের প্রশংসাকীর্তন করে আবৃত্তি করলেন একটি কবিতা। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আনসারি এক যুবক উটের গলার একটি হাড় ছুড়ে মারেন তার মাথায়। 

মারাত্মকভাবে আহত হয়ে রাসুলের কাছে ছুটে যান তিনি। অভিযোগ করেন সেই যুবকের বিরুদ্ধে। তখন রাসুল (সা.) দোয়া করলেন, ‘হে আল্লাহ! মদ সম্পর্কে আমাদেরকে একটি পরিষ্কার বর্ণনা ও বিধান দান করুন, যাতে সব দ্বিধাদ্বন্দ্ব নিরসন হয়ে যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহ তায়ালা মদ-জুয়াকে সম্পূর্ণরূপে হারাম ঘোষণা করলেন।’ ‘হে ঈমানদাররা! মদ, জুয়া, মূর্তি ও তীর নিক্ষেপ এসব নিকৃষ্ট বস্তু ও শয়তানের কাজ। কাজেই তোমরা এগুলোকে বর্জন করো। যাতে তোমরা সফল হতে পারো। 

শয়তান মদ ও জুয়ার মাধ্যমে তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক শত্রুতা ও তিক্ততা ঘটাতে চায় এবং তোমাদের আল্লাহর স্মরণ ও নামাজ থেকে বিরত রাখতে চায়। তবুও কি তোমরা তা থেকে বিরত থাকবে না!’ (সুরা মায়েদা : ৯০-৯১)। এই আয়াতে মদ ও জুয়াকে নিকৃষ্ট বস্তু ও ক্ষতিকর কাজ উল্লেখ করে সম্পূর্ণ হারাম ঘোষণা করা হয়েছে।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন, ‘যখন নবীজির পক্ষ থেকে একজন ঘোষক মদিনার অলিগলিতে প্রচার করতে লাগলেন যে, মদপান হারাম ঘোষণা করা হয়েছে, তখন যার হাতে মদের যে পাত্র ছিল, তা তারা সেখানেই ফেলে দিয়েছিলেন। সেদিন মদিনায় এত পরিমাণ মদ নিক্ষিপ্ত হয়েছিল যে, মদিনার অলিগলিতে বৃষ্টির ফলে সৃষ্ট কাদাপানির মতো অবস্থা হয়েছিল এবং অনেক দিন পর্যন্ত মদিনার অলিগলির অবস্থা এমন ছিল, যখনই বৃষ্টি হতো, মদের গন্ধ মাটির ওপর ফুটে উঠত।’

 (তাফসিরে মায়ারেফুল কোরআন :

সাদিক কায়েম ভিপি পদে জয়লাভ

  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট গণনা চলছে। এখন পর্যন্ত ১৬টি হলের ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। এই ফলা...